জনতার বাঁধায় পিছু হটলো বিআইডব্লিউটিএ
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬:৩৯, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
সড়ক অবরোধ, টায়ারে আগুন, গাছ ফেলে কক্সবাজারে স্থানীয়দের বিক্ষোভ। ছবি: সমাজকাল
কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর তীরে ইতিমধ্যে উচ্ছেদ হওয়া জমিতে নদী বন্দরের সীমানা পিলার স্থাপনে স্থানীয়দের বাঁধার মুখে পিছু হটেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সড়ক অবরোধ, টায়ারে আগুন, গাছ ফেলে কয়েক হাজার নারী পুরুষের বিক্ষোভের মুখে পিলার স্থাপনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার নদী বন্দরের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল।
তিনি জানান, চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিআইডব্লিউটিএ সাড়ে ৪’শ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী তীরের ৬৩ একর জমি দখলমুক্ত করে। এরপর উচ্ছেদ করা জমিতে নদীর বন্দরের সীমানা নির্ধারণ করে পিলার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত মতে ২০১৯ সালের যৌথ জরিপ ম্যাপ অনুযায়ী সেই এলাকায় উচ্চ ও টেকসই সীমানা পিলার স্থাপন, সাইনবোর্ড বসানো আর কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ- এ তিনটি কাজ ৩ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
আব্দুল ওয়াকিল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ওই এলাকায় কিছু মানুষ বিক্ষোভ, অবরোধ শুরু করেন। তাই শনিবার পর্যন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। রবিবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ সহ কার্যক্রম শুরু করতে গেলে সড়ক অবরোধ, টায়ারে আগুন, গাছ ফেলে কয়েক হাজার মানুষের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এসময় গুলি এবং ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বাঁধার মুখে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, যারা বিক্ষোভ করছেন তাদের কারও কাছে বৈধ কাগজপত্র নেই। তবে এই মুহূর্তে কোনো উচ্ছেদ অভিযানও পরিচালিত হচ্ছে না। শুধু ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উচ্ছেদকৃত নদীর জমিতে সীমানা পিলার বসানো হচ্ছে। এটাকে কেন্দ্র করে পুরনো দখলদারেরা ভাসমান লোকজন জড়ো করে সরকারী কাজে বাধা দিচ্ছে।
রবিবার সকালে দেখা গেছে, কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটস্থ বাঁকখালী নদীর তীরে কয়েক হাজার মানুষ। তারা টায়ারে আগুন, সড়কে গাছ দিয়ে অবরোধ করে নানা শ্লোগান দিচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহ বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ গেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন। ওই সময় কিছু বিকট শব্দও শোনা গেছে।
বিক্ষোভ অংশ নেয়া আবদুল গফুর নামের এক ব্যক্তি জানান, এখানে বৈধ জমিতে তার ঘর ছিল। তা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এব্যাপারে ইতিমধ্যে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত এখানে কোন ধরনের স্থাপনা না করতে আদেশও দিয়েছে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ তা মানছে না। তারা কাঁটাতার-পিলার দিয়ে জমি পুরো দখলের প্রক্রিয়া করছে। এটা হতে দেয়া হবে না।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, “তারা তো আদালতের আদেশ মানছেন না। কোন কাগজপত্রও দেখছে না। নিজেদের মতো করে কাজ করছে। এটা করতে দেয়া হবে না।”
ঘটনাস্থলে বিআইডব্লিউটিএ-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুর রহমান জানান, এখানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে পিলার স্থাপনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এব্যাপারে উর্ধ্বতন মহলের সাথে আলাপ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
