তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫:০৭, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোনাব্বর হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
রংপুরের তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে (৬০) ঘরে ঢুকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত যোগেশ-সুবর্ণা রায় দম্পতি উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে সাতটার দিকে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীরা মই বেয়ে নিহত দম্পতির বাড়ির ভেতরে ঢোকেন। প্রধান দরজার চাবি নিয়ে দরজা খোলার পর ডাইনিং রুমে যোগেশ চন্দ্র রায় ও রান্নাঘরে সুবর্ণা রায়ের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আসে।
বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক দীপক চন্দ্র রায় বলেন, তার পরিবার ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে যোগেশ চন্দ্র রায়ের বাড়ির দেখভাল করেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও তিনি সেখানে কাজ করতে যান। সকাল সাতটা পর্যন্ত ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় সন্দেহ হয় তার। ডাকাডাকি করেও কোনো শব্দ না পেয়ে আশেপাশের লোকজনকে ডাকেন। এরপর মই বেয়ে ভেতরে ঢুকে দেখেন, ঘরে কেউ নেই। পরে ডাইনিংরুমের দরজা খুলে যোগেশ ও রান্নাঘরে তার স্ত্রীর মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত যোগেশ চন্দ্র রায় পেশায় স্থানীয় চাকলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ২০১৭ সালে অবসর নেন তিনি। তার দুই ছেলে, বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় থাকেন জয়পুরহাটে আর ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায় ঢাকায় পুলিশে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী দুজনই থাকতেন।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পাপন দত্ত জানান, মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ ও তার স্ত্রী সুবর্ণাকে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে গলা কেটে হত্যা করেছে। ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তারা দেয়াল টপকে বাসায় ঢুকে গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। খবর পেয়ে তারাগঞ্জ থানা থেকে পুলিশও সেখানে গেছে।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। কারা কী কারণে তাদের হত্যা করেছে, তা এখনও জানা যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোনাব্বর হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
