‘আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি’ লিখে রাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮:৫৪, ১২ নভেম্বর ২০২৫
আত্মহত্যার আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের শিক্ষার্থী সোনিয়া সুলতানার লিখে যাওয়া চিরকুট। ছবি: সংগৃহিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মির্জাপুর এলাকার ‘ইসলাম টাওয়ার’ নামের এক আবাসিক ভবন থেকে সোনিয়া সুলতানা (২২) নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত সোনিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায়।
মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেক জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু ততক্ষণে সোনিয়ার বাবা লাশ নামিয়ে ফেলেছিলেন। ফ্যানের সঙ্গে ওড়না বাঁধা অবস্থায় তাকে ঝুলন্ত দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, সকাল ৬টার দিকে তিনি ফাঁস দেন। তার মা-ই প্রথমে লাশ দেখতে পান।
ঘটনাস্থল থেকে দুটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। একটিতে লেখা ছিল—
‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার যেন পোস্টমর্টেম করা না হয়। আব্বু-আম্মু ধ্রুবতাঁরা আমি খুব ভালোবাসি। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আল্লাহকে বলো আমাকে মাফ করে দিতে।’
অন্য চিরকুটে লেখা ছিল—
‘আমি খুব করে বাঁচতে চেয়েছি, বিশ্বাস করো তোমরা; কিন্তু নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে আর পেরে উঠলাম না। আল্লাহ তুমি আমাকে মাফ করে দিও…’
ওসি আরও জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই এবং তারা ময়নাতদন্তও চান না। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আখতার বানু বলেন, ‘সোনিয়া খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল। সব বিষয়ে ভালো ফল করত। গতকালও তার ভাইভা হয়েছিল, সেটাও ভালো দিয়েছে। সে ছিল খুব ধার্মিক ও পর্দানশীল মেয়ে। জানা গেছে, মৃত্যুর আগে সে মায়ের সঙ্গে ফজরের নামাজও পড়েছে।’
অধ্যাপক বানু আরও বলেন, ‘আমরা সবাই স্তম্ভিত। সোনিয়ার মধ্যে আত্মহত্যার কোনো ইঙ্গিত আগে পাইনি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওড়না ও কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে।’
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহপাঠী ও শিক্ষকেরা বলছেন, ‘একটা প্রাণ হারাল নিজের যুদ্ধের কাছে হেরে গিয়ে।’
