তেঁতুলিয়ায় ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮:১৬, ৯ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০৪:১৮, ১০ নভেম্বর ২০২৫
তেঁতুলিয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আবদুস সোবহান। ছবি: সংগৃহীত
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আব্দুস সোবহান (৫৭) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধর্ষণের অভিযোগে সোবহানের বিরুদ্ধে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় মামলা করেছেন ওই কিশোরীর বাবা।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী স্থানীয় শালবাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্তের গ্রেপ্তার, শাস্তি ও বিচারের দাবিতে শনিবার রাতে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।
এরপর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া থেকে সোবহানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আব্দুস সোবহান তিরনইহাট ইউনিয়নের রওশনপুর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় গতকাল রবিবার বিকেলে অভিযুক্ত সোবহানের শাস্তি দাবিতে শালবাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শালবাহান উচ্চ বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
এলাকাবাসী জানায়, আব্দুস সোবহান বাড়িতে লোকজন না থাকায় ওই কিশোরীকে একা পেয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে।পরে ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এতে ওই কিশোরী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে কাউকে বিষয়টি জানাননি। কিন্তু ধর্ষণের কারণে সে এখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি এর আগেও এ ধরনের অপকর্মের জন্য জরিমানা দিয়েছেন।
এলাবাসীর অভিযোগ, কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে ধর্ষণ করে থাকেন সোবহান। এসব নিয়ে এলাকাবাসী তার প্রতি খুবই ক্ষিপ্ত। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, অভিযুক্ত সোবহান সম্পর্কে তার দাদা হন। বাড়িতে প্রায়ই আসতেন। গত ৪ এপ্রিল শুক্রবার বাড়িতে সে একা ছিল। তার মা-বাবা মরিচ তুলতে গিয়েছিল। ঘরে শুয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ কিছু বুঝে উঠার আগেই লোকটা হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে ধরে তাকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য তাকে নানা ভয়ভীতি দেখায়। বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ কারণে কাউকে কিছু জানানো হয়নি। এখন সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এর কঠিন বিচার দাবি করেছে মেয়েটি।
কিশোরীর বাবা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি পাথর শ্রমিক। পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করি। ঘটনাটি জানতাম না। কখনো জানানো হয়নি। গত বৃহস্পতিবার জানতে পেরে মেয়ের বিচার পাব কিনা খুব দুশ্চিন্তাবোধ করছি। আমি এখন কী করব, মেয়েটা সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। এর মধ্যে দাদার বয়সী সোবহান লোকটা মেয়েটাকে জোর করে ধর্ষণ অন্তঃসত্ত্বা করে ফেলেছে। আমি এর সুবিচার চাই। আমার মেয়ের যে ক্ষতি করেছে তার উপযুক্ত বিচার চাই। ধর্ষক সোবহানের ফাঁসি কিংবা আইনের যথাযথ বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।’
তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর হোসাইন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারও হয়েছে। এ ধরনের সামাজিক অবক্ষয় থেকে আগামী দিনে মানুষ যাতে বের হয়ে আসতে পারে তার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ধর্ষকের কঠোর শাস্তি কামনা করছি।’
তেঁতুলিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজির হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
