৩ আসামির ১০ বছরের কারাদণ্ড
শহীদ জুলাই যোদ্ধার কন্যা ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪:৩০, ২২ অক্টোবর ২০২৫
পটুয়াখালীর দুমকিতে আলোচিত শহীদ জুলাই যোদ্ধার কন্যা কলেজছাত্রী ধর্ষণ মামলায় তিন কিশোর আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন বুধবার (২২ অক্টোবর) এ রায় ঘোষণা করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ধারায় তিন আসামিকেই ১০ বছর করে এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(২) ধারায় দুই আসামিকে অতিরিক্ত ৩ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় অনুযায়ী: ইমরান মুন্সী (১৭) – ১০ বছরের কারাদণ্ড
সাকিব মুন্সী (১৭) – ১০ বছর + পর্নোগ্রাফিতে আরও ৩ বছর = মোট ১৩ বছর
সিফাত মুন্সী (১৬) – ১০ বছর + পর্নোগ্রাফিতে আরও ৩ বছর = মোট ১৩ বছর
বিচারক জানান, একটির পর একটি এই সাজা কার্যকর হবে। যেহেতু আসামিরা অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাই তাদের শিশু আইনের অধীনে বিচার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় শহীদ জুলাই যোদ্ধার কন্যা কলেজছাত্রী বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি ফেরার পথে তিন আসামি তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।
তারা একটি পরিত্যক্ত বাড়ির জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে এবং সেই নৃশংস দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
ভুক্তভোগীর পরিবার পরদিনই দুমকি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্তভার পান দুমকি থানার তৎকালীন তদন্ত ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম। তদন্ত শেষে তিনি ১ মে তিনজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত আজ বুধবার এই বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম তালুকদার।
ঘটনার পর ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীকে ঢাকায় মায়ের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অপমান ও মানসিক যন্ত্রণায় সহ্য করতে না পেরে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এই আত্মহনন দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয় এবং সামাজিক মাধ্যমে ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হয় সাধারণ মানুষ।
আলোচিত এই মামলার রায়কে ঘিরে সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিন আসামিকে নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয়। রায় শোনার জন্য স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়; আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় জমে সাধারণ মানুষের।
