স্বামীর মুখে ‘তুই মরে যা’ শুনে আগুনে ঝলসাল তরুণী
চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪:৪৪, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে স্বামীর মুখে ‘তুই মরে যা’ কথাটি শুনে ক্ষোভে নিজের শরীরে আগুন দিয়েছেন এক তরুণী গৃহবধূ। দগ্ধ অবস্থায় তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জাতীয় বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের উত্তর হাসা গ্রামের মিজি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ গৃহবধূর নাম মিতু আক্তার (১৮)। তার স্বামী রাকিব হাসান, পেশায় অটোরিকশা চালক। দম্পতির দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে, ছোট মেয়েটির বয়স মাত্র আড়াই মাস।
স্থানীয়রা জানায়, রাকিব ও মিতুর সংসারে প্রায়ই কলহ হতো। শাশুড়িকেও সেই দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মিতু ও তার পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, রাকিবের মা ছেলের কাছে প্রায়ই নানা অভিযোগ এনে দাম্পত্য জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করতেন।
ঘটনার দিন সকালেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে মিতুকে মারধর করেন এবং বলেন— ‘তুই মরে যা।’ এরপর তিনি বাড়ি থেকে কাজে চলে যান।
বিকেলে রাকিব বাড়ি ফিরে এলে মিতু রাগে ঘরের ভেতর ঢুকে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আগুন নেভিয়ে তাকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আনিসুর রহমান জানান, মিতুর শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলের জাতীয় বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
ডা. আনিসুর রহমান বলেন,‘রোগীর শরীরের বেশিরভাগ অংশই দগ্ধ হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর দ্রুত রেফার করা হয়েছে। অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন।’
ফরিদগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করেই আত্মহত্যার চেষ্টা বলে ধারণা করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত কর্মকর্তারা।
