লক্ষ্য ৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:০৯, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০৩:৪৫, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
নতুন বন্ডটির লেনদেন একযোগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত
দেশের পুঁজিবাজারে পাঁচ বছর মেয়াদি নতুন একটি ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি সিকিউরিটিজ বাজারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত এ বন্ডের মাধ্যমে সরকার মোট ৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে—যা চলতি অর্থবছরে সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) নতুন বন্ডটির লেনদেন একযোগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) শুরু হয়। দুটি স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটেও বন্ডটির তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে। উভয় বাজারে বন্ডটির অফিসিয়াল নাম নির্ধারিত হয়েছে ‘০৫ওয়াই বিজিটিবি ৩০/১১/২০৩০’।
লেনদেনের জন্য বন্ডটির কমন কোড দেওয়া হয়েছে ‘টিবি৫ওয়াই১১৩০’। ডিএসইতে এর স্ক্রিপ্ট কোড ‘৮৮৫৪৮’ এবং সিএসইতে নির্ধারিত হয়েছে ট্রেডিং আইডি ‘৫০৩১৪’।
নতুন এই ট্রেজারি বন্ডকে পুঁজিবাজারের ডেবট বোর্ডের অধীনে ‘এ’ ক্যাটাগরির সিকিউরিটিজ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে বন্ডটির লেনদেন ও নিষ্পত্তি কার্যক্রম অন্যান্য সরকারী সিকিউরিটিজের মতোই নীতিমালা অনুসারে পরিচালিত হবে। বন্ডটির কুপন রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১০.৭৯ শতাংশ, যা বছরজুড়ে দুই কিস্তিতে বিনিয়োগকারীদের প্রদান করা হবে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে এই কুপন রেট বিনিয়োগকারীদের জন্য তুলনামূলকভাবে আকর্ষণীয়।
লেনদেন শুরুর দিন প্রতি ইউনিটের মূল্য ঠিক করা হয়েছে ১০১ টাকা ১৩ পয়সা, যদিও এর অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। প্রতিটি লটে ১ হাজার ইউনিট থাকার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বড় পরিসরের ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীরাও এতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। বন্ডটির মোট ইস্যু আকার ৫০ কোটি ইউনিট, যার প্রতিটির অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক এই ইস্যুর মাধ্যমে মোট ৫ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করেছে।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর পুঁজিবাজারে ১০ বছর মেয়াদি একটি নতুন ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়, যার মাধ্যমে সরকার আড়াই হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করে। তারও আগে ১০ নভেম্বর বাজারে আসে ২ বছর মেয়াদি আরেকটি সরকারি বন্ড, যার ইস্যু আকার ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। পরপর কয়েকটি সরকারি বন্ড পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডেবট মার্কেট আরও সক্রিয় হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সরকারের বিকল্প উৎস বাড়বে।
নতুন ৫ বছর মেয়াদি বন্ডটির লেনদেন শুরুর মধ্য দিয়ে সরকারি সিকিউরিটিজে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আরও বিস্তৃত হওয়ার আশা করছে বাজার কর্তৃপক্ষ।
পুঁজিবাজারে নিরাপদ বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে সরকারি বন্ড দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয় হলেও সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চ কুপন রেট, নিয়মিত চাহিদা এবং স্থিতিশীল রিটার্ন নিশ্চিত হওয়ায় এর প্রতি আগ্রহ আরও বেড়েছে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।
